ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
শিক্ষক রথীন্দ্র কুমার দাস স্মরণে শোকসভা টিলা কেটে সরকারি জায়গায় ইউপি চেয়ারম্যানের বহুতল মার্কেট ছয় থানার ওসি বদলি কমিশনকে নজরে রাখবে রাজনৈতিক দলগুলো সালমান-আনিসুল হক ফের রিমান্ডে দেশের বিদেশি ঋণের পরিমাণ ১০৪ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগে সহায়তা দেবে জার্মানি হাওরকে বাঁচতে দিন আগস্টে সড়কে ঝরেছে ৪৭৬ প্রাণ কৃষি গুচ্ছের ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা ২৫ অক্টোবর “অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে হবে, তবে তা সীমাহীন নয়” ইজারাকৃত সব জলমহালের সীমানা নির্ধারণের দাবিতে বিক্ষোভ পদ হারিয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরছেন আ.লীগ নেতারা সাবেক ৩ সিইসি’র বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা নিহতদের পরিবার পাবে ৫ লাখ টাকা হাওর উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে: মহাপরিচালক হাওর উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে: মহাপরিচালক অন্তর্বর্তী সরকারকে যেকোনও সহযোগিতা করতে প্রস্তুত ইউনেস্কো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি প্রধান বিচারপতির ১২ নির্দেশনা চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর বিবেচনার অনুরোধ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঢেলে সাজাবে প্রশাসন, আসবে বড় পরিবর্তন

  • আপলোড সময় : ১২-০৮-২০২৪ ১২:২৩:৩৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১২-০৮-২০২৪ ১২:২৩:৩৭ পূর্বাহ্ন
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঢেলে সাজাবে প্রশাসন, আসবে বড় পরিবর্তন
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে দেশে। নতুন সরকার দায়িত্ব নিয়েই সংস্কারকাজে হাত দিয়েছে। এর অংশ হিসেবে ঢেলে সাজানো হবে প্রশাসন। শিগগিরই কেন্দ্রীয় ও মাঠ প্রশাসনে আসতে পারে বড় ধরনের পরিবর্তন। 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর গত শুক্রবার দপ্তর বণ্টন হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নিজ হাতে রেখেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জানা গেছে, প্রধান উপদেষ্টা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়েও তিনি বসবেন। সেখানে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রশাসনের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরবেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী। বিগত সময়ে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের দাবির বিষয়টি তাঁকে অবহিত করা হতে পারে। সরকারপ্রধানের সম্মতিসাপেক্ষে প্রশাসনে প্রয়োজনীয় রদবদল করা হতে পারে। 

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে যাঁরা তাঁর আস্থাভাজন কর্মকর্তা বলে পরিচিত, তাঁরাই এখন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদপ্তরের প্রধান। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে তাঁদের অনেকেই দায়িত্ব হারাতে পারেন। বিগত সরকারের আস্থাভাজন কর্তাব্যক্তিদের সরিয়ে ১৬ বছর ধরে বঞ্চিত যোগ্য ও তুলনামূলক নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ ইমেজের কর্মকর্তাদের পদায়ন হতে পারে। বিশেষ করে মাঠ প্রশাসনের ‘দলকানা’ বিভাগীয় কমিশনার, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করে পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। চলতি সপ্তাহেই সচিব পর্যায়ের কয়েকটি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল হতে পারে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সচিব পদেও দেখা যেতে পারে নতুন মুখ। কয়েকদিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব ও উপদেষ্টাদের একান্ত সচিব (পিএস) নিয়োগ হতে পারে। 

ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। এ মুহূর্তে মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সচিব ও সচিব পদমর্যাদার ১৮ জন কর্মকর্তা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে আছেন। তাঁদের অধিকাংশের চুক্তি বাতিল করা হতে পারে। এ ছাড়া প্রশাসনে যাঁরা হাসিনা সরকারের আস্থাভাজন ও প্রভাবশালী বলে পরিচিত সিনিয়র সচিব ও সচিব, তাঁদেরকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হতে পারে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও দপ্তর থেকে বদলি করে কম গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরেও পাঠানো হতে পারে কাউকে কাউকে।

জানাগেছে, প্রশাসনে অসংখ্য কর্মকর্তা আছেন যাঁদের শুধু রাজনৈতিক কারণেই পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। তাঁদের ‘বনসাই’ বানিয়ে রাখা হয়েছে। প্রশাসনে বিসিএস ১৩তম ব্যাচের কর্মকর্তারা দেড় বছর আগেই সচিব হয়েছেন, সেখানে বিএনপি-জামায়াত ঘরানার ওই ব্যাচের কর্মকর্তারা এখনো সিনিয়র সচিব পদেই কর্মরত আছেন। গত ১৬ বছরে তাঁদের কপালে কোনো পদোন্নতি জোটেনি। 

পদোন্নতিবঞ্চিত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ফোরামের সভাপতি বিসিএস ১৩তম ব্যাচের কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার ব্যাচমেটরা দেড় বছর আগেই সচিব হয়েছেন। অথচ আমি এখনো সিনিয়র সহকারী সচিব পদে আছি। ভালো দক্ষ কর্মকর্তা বলে আমাকে ওএসডি করা হয়নি। রাজনৈতিক তকমা দিয়ে আমাকে ১৬ বছর পদোন্নতিবঞ্চিত করা হয়েছে। আমার কপালে কোনো পদোন্নতি জোটেনি। আমার মতো প্রশাসনে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন, যাঁরা ১৬ বছর ধরে একই পদে কর্মরত। শত শত কর্মকর্তা বছরের পর বছর ওএসডি থেকে অবসরে গেছেন। আমরা এ সরকারের কাছে প্রতিকার চাই।

এদিকে মাঠ প্রশাসনে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক হিসেবে যাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়, তাঁদের সরকারের আস্থাভাজন ও দক্ষ কর্মকর্তা বলেই মনে করা হয়। বর্তমানে বিভাগীয় কমিশনার পদে ঢাকা ও খুলনার বিভাগীয় কমিশনার ১৫ ব্যাচের এবং বাকিগুলোতে ১৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক পদে বর্তমানে বিসিএস ২৪, ২৫ ও ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁদের অনেকে ঢাকায় ফেরার প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষা করছেন। 

এ প্রসঙ্গে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রশাসন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, আমার ধারণা, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রথমেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব দেবেন। এরপর বিচার বিভাগের সমস্যার পর প্রশাসনের দিকে নজর দেবেন। তবে যেসব কর্মকর্তা সাবেক সরকারের কট্টর সমর্থক বলে পরিচিত, তাঁদের হয়তো ওএসডি বা কম গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পদায়ন করা হতে পারে। যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত, তাঁরা পদোন্নতি না পাওয়া পর্যন্ত বড় ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে যোগ্যতার অভাবে পোস্টিং পাবেন না। সে ক্ষেত্রে প্রশাসনের নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ ইমেজের কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে পারেন। -আজকের পত্রিকা

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স